বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আওয়ামী লীগের জন্য, ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন। তাহলে রাজনৈতিক মোড়টা তারা ঘুরাতে পারে। নির্বাচন বানচাল হতে পারে। সেজন্যই আমাদের, আপনাদের সবার সজাগ থাকতে হবে আমাদের জাতীয় স্বার্থে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত সনাতনী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শেখ মুজিব বিহারি-বাঙালি দাঙ্গা লাগিয়ে, বিহারি-বাঙালি আলাদা করে ১৯৭০ এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিলেন- এ অঞ্চলের লোকদের বাঙালি বানিয়ে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর পেছনে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পটু। দরকার হলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে নেবে। তিনি বলেন, কোনো মানুষই সাম্প্রদায়িক না, কোনো ধর্মই না। কিন্তু কখনও কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করাতে হয়, যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। এরশাদও ৮৮ সালে এ কাজটা করেছিল। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতার মাঝে একটা রাজনীতি আছে। অনেক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এ ভারতবর্ষে, এ উপমহাদেশে হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। কিছু গুজবের কারণে। ভারতে এসব দাঙ্গা এখনও চলমান। রাজনৈতিক কুটিলতার মধ্যে এ সাম্প্রদায়িকতা এখন না, হাজারো বছর আগে থেকে আছে। হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু -এ হিন্দুরাই, হিন্দুদের ক্ষতি করে। এক ভাই যায়, তিন ভাইয়ের জায়গা লিখে দিয়ে যায়। অনেক পুরনো জমিদার বাড়িতে মন্দির আছে। কিন্তু মন্দির দেবোত্তর না। তাই যেখানে যত মন্দির আছে, সব মন্দির দেবোত্তর করা এবং সীমানা চিহ্নিত করা দরকার। সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের লোক সংস্কৃতির মধ্যেও এই ধর্ম সমন্বয় আছে। হিন্দু-মুসলমান আমরা একটা বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ, আবার নিজ নিজ ধর্মের জন্য যে সংস্কৃতি, সেই সংস্কৃতির মধ্যেও একটা সমন্বয় ছিল। এখানে কোনো প্রভেদ ছিল না, এখানে কোনো বিভেদ ছিল না। এটাকে শেখ হাসিনা ভাঙতে চেয়েছেন। দেখাতে চেয়েছেন এদেশ বিভেদ-বিভাজনে ভরপুর। সুতরাং, আমাকে সমর্থন করো। অন্য বিরোধী দল কাউকে সমর্থন করতে হবে না। এ কারণে আমি জোর করে জনসমর্থন ব্যতিরেকে দিনের ভোট রাতে করে, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদেরকে যেতে না দিয়ে, আমি নির্বাচন কমিশন দিয়ে ভোট ঘোষণা করবো। বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে এইভাবেই বিনষ্ট করেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলেই দেব মন্দির দেবালয় ভাঙা হয়েছে, প্রতিমা ভাঙা হয়েছে। কিন্তু যারা ধরা পড়েছেন, তারা বেশিরভাগ হচ্ছে- আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো সংগঠনের লোক। পালানোর পরেও কিন্তু ওনার ষড়যন্ত্র কিন্তু থামছে না। রিজভী বলেন, আজকে দেখছি, বিবিসিতে তারা বলছে- কলকাতায় আওয়ামী লীগের একটি অফিস নেওয়া হয়েছে। বড় বড় নেতাদের ওখানে যাতায়াত শুরু হয়েছে। কারণটা কী? আমাদের দেশের মানুষ ভাবছে, কোনো কিছু সেখান থেকে করা হচ্ছে কিনা। বড় ধরনের কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে কিনা- সবার মনের মধ্যে এই জিনিসটা ক্রিয়া করছে। যে মেজর ধরা পড়েছে, সে আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে প্রশিক্ষণ দেবে। এরকম দেখি আরও আছে। এ ঘটনাগুলা কিসের? কলকাতায় কার্যালয় আর বাংলাদেশের ভেতরে এ সব ঘটনার যে যোগসূত্র নেই, তা বলা যাবে না। মাস্টারমাইন্ড হয়ে শেখ হাসিনা সেখান থেকে বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ শুরু করেছেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্না রায় দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর সরাফত আলী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

আ’লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে দাঙ্গা প্রয়োজনÑ গয়েশ্বর
- আপলোড সময় : ০৯-০৮-২০২৫ ০২:০৮:২০ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৯-০৮-২০২৫ ০২:০৮:২০ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ